">
মুখোশধারী শব্দটির পেছনে লুকিয়ে থাকে কিছু মানুষের আশা ভঙ্গ কিংবা স্বপ্ন ভঙ্গের করুন দৃশ্য! এই মুখোশের কল্যানেই মানুষ কখনও কখনও সফলতার বদলে জিতেছে নিয়েছে হতাশা! সর্বশান্ত হয়েও ফিরেছে কেউ কেউ।
জীবনে চলার পথে এই মুখোশধারী মানুষগুলো চেনা আপনার জন্য খুব জরুরী। যারা আপনার সাথে থেকে, আপনাকে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষনের মধ্যে দিয়ে আপনার ক্ষতি করার সর্বোচ্চ উপায়টা খুজে নিবে এবং সর্বশেষটাতে আপনার দেখানো পথে সফলতা পেতে মরিয়া হয়ে উঠবে। ঠিক তেমন যেমনটি কথায় বলে আপন ক্ষতি করে কাছের মানুষে!
মুখোশধারী মানুষগুলোর প্রকৃতি চেনা যেমন খুব সহজ তেমনি খুব কঠিনও বটে। এই শ্রেণীর মানুষগুলো লোভী হয়। কেউবা সল্পমেয়াদে কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদে লোভী। সল্প মেয়াদের লোভী মানুষগুলো আপনার সাথে প্রতারণা করবে আর দীর্ঘ মেয়াদের লোভী মানুষগুলো
আপনাকে ব্যবহার করে সর্বোচ্চটা লুফে নেওয়ার প্রচেষ্টায় যখন সফল হবে তখনই ছুড়ে ফেলবে আপনাকে।কাজের খাতিরে কিংবা প্রয়োজনে প্রতিদিন নানা ধরনের মানুষের সাথে চলতে হয়। কিছু কিছু সময় শুধু প্রয়োজনেই নয় অপ্রয়জনেও চলতে হয়। এরই মধ্যে কিছু মানুষের সাথে সুসম্পর্ক তৈরী হয়। শুরুটা এখান থেকেই।
আমাদের বেশীরভাগ মানুষের মধ্যে একটি সহজ প্রবৃত্তি কাজ করে, সেটি হল যাচাইবাছাই না করেই বিশ্বাস! অতঃপর দীর্ঘশ্বাস ‘‘মানুষকে বিশ্বাস করা কি পাপ নাকি! জীবনে চলার পথে মানুষকে বিশ্বাস করতেই হয়!’’
নিজেকে স্বান্তনা দেওয়ার জন্য আমাদের কত রকমের শ্রেষ্ঠ সব অজুহাত আছে তা বলা বাহুল্য। আর যাই হোক আমরা খুব সহজে যে কাজটি সঠিক ভাবে করতে পারি তা হলো অদৃষ্ট কিংবা ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হিসেবে তুলে ধরে বিষয়টি ভুলে যাওয়া! অথবা অন্যকারও গর্দান বা ঘাড়ের উপর দোষটা চাপিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হওয়া।
এমন সব ঘটনার পেছনে সবচেয়ে বড় যে দুর্ঘটনা ঘটে যায় তা হলো ভবিষ্যতের জন্য নিজের শিক্ষা না নিতে পারা। কোন ভুলের কারনে কেন ঘটনাটি ঘটলো সেটি খুঁজে না দেখে বিষয়টি সেখানেই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে নিজেকে স্বান্তনা দেওয়া।
এরপর আরও ভিন্নধর্মী অন্য কোন নুতন বড় প্রতারণার শিকার হওয়া যায় তার প্রস্তুতি নেওয়া! পুনঃরায় সেই রায় মেনে নিয়ে অদৃষ্টের হাতে তুলে দেওয়া!মানুষকে বিশ্বাস করুন তবে অবশ্যই বিশ্লেষণপূর্বক। যে কোন মানুষের হাতে আপনার মূল্যবান বিশ্বাসটা তুলে দেওয়ার আগে এটা মাথায় রাখুন সে আপনাকে যা দেখাচ্ছে তা দৃশ্যমান বাস্তব না হয়ে মরিচীকাও তো হতে পারে। হতে পারে বিশ্বাসের দাম এতটা যা আপনার সারা জীবনের মূল্যবান সম্পদ।
দুঃচিন্তায় পড়ে গেলেন তো?যদি একটি কাঁচের গ্লাসের অর্ধেকটাতে পানি ভরা হয় তবে বাকি অর্ধেকে বাতাস ভরা থাকে। আমরা যখন কাউকে বিশ্বাস করি তখন শুধু পানিটা দেখতে পাই। বাতাসটাও দেখতে পাই তবে প্রতারিত হওয়ার পরে। কেউ যদি আপনার উপকার করে তবে ভাবতে যাবেন না সেটা নিঃস্বার্থ।
সল্পমেয়াদে যদি আপনার কাছে দৃশ্যমান কোন স্বার্থ নাও থাকে দীর্ঘমেয়াদে থাকবে এটি নিশ্চিত।
সল্পমেয়াদে বিশ্বাসের মুখোশ পরিহিত মানুষগুলো চেনা সহজ হলেও দীর্ঘমেয়াদে বিশ্বাসের মুখোশ পরিহিত মানুষ চেনা কঠিন কাজ। যদিও সেইফ জোনে চলতে পারা মানুষগুলো বুদ্ধিমান। সবার প্রথম একটি বিষয়ে নিশ্চিত হোন আপনি যে মানুষটিকে বিশ্বাস করছেন তার স্বার্থ কতটুকু। যদি তার স্বার্থ অক্ষুন্ন থাকে তবে কিছুটা হলেও আপনি সেইফ জোনে আছেন।
চুক্তি কখন ভঙ্গ হয় জানেন? যখন চুক্তির পক্ষগুলো উইন উইন পর্যায়ে থাকেনা। যে কোন চুক্তির ক্ষেত্রে পক্ষগুলোর উইন উইন পর্যায়ে সব পক্ষই লাভবান হয়। সেক্ষেত্রে চুক্তি ভঙ্গের মত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়না। বন্ধন বিশ্বাস সবটা থেকে যায় অটুট। বিজ্ঞাপনের ভাষায়- অটুট মজবুত গাঁথুনি যা সম্পর্কে ততটা সময় থাকে যতটা সময় স্বার্থ অক্ষুন্ন থাকে।
বেশীরভাগ যানবাহনের পেছনে ছোট্ট কিছু সাবধান বানী লেখা থাকে, নিশ্চয় দেখেছেন। “নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন” কিংবা “গতিসীমা সীমিত”। হ্যা এই ছো্ট্ট সাবধান বানী আপনার জন্য যদি মুখোশধারী ভাল মানুষের থেকে ক্ষতিগ্রস্থ্য হতে না চান। সম্পর্ক যত ঘনিষ্ট হোক সেটাকে নির্ধারিত সীমা অথবা সেইফ জোনের বাইরে নিবেন না। মুখোশধারী ভাল মানুষগুলোর থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখুন আর্থিক ও মানসিক ভাবে ভাল থাকুন।